আর নয় হাত খরচের চিন্তা! দেখে নাও ছাত্র জীবন অর্থ উপার্জনের 10টি সহজ ও সেরা উপায় 2025

 

top-10-smart-income-ideas-for-students-online-and-offline

Top 10 Online And Offline Income Ideas for College & School Students in 2025

ছাত্র জীবনে আমাদের প্রত্যেকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সঠিকভাবে,মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করা এবং যতটা সম্ভব জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করা। কিন্তু বর্তমানে যে সময়কাল আমরা দেখতে পাচ্ছি, এতে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর পড়াশোনার যে খরচ,সেটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মা-বাবার কাছে মেটানো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। সেই কারণে আমার মনে হয় ছাত্র জীবনে প্রত্যেকেরই উচিত নিজের হাত খরচ বা পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করা। তাই আজকে আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তোমাদের ২০২৫ সালে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অনলাইন এবং অফলাইন অর্থ উপার্জনের সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে বলব যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে তোমরাও খুব সহজেই নিজের হাত এবং পড়াশোনা খরচ চালাতে পারবে.



1. ফ্রিল্যান্সিং করে বাড়িতে বসে ইনকাম


যদি তোমার কাছে একটি স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন থেকে থাকে, তাহলে তুমি খুব সহজে ফ্রিল্যান্সিং করে, বাড়িতে বসেই ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবে। এবার যারা জানো না ফ্রিল্যান্সিং মানে কী তাদের একেবারে সহজ ভাষায় বলি। fiverr, upwork এর মত কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্ট এসে থাকে যারা নিজের কাজের জন্য-

• গ্রাফিক ডিজাইনার, 

• ভিডিও এডিটর, 

• ফটো এডিটর,

• কনস্টেন্ড রাইটার,

• সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

• ভয়েস ওভার আর্টিস্ট সহ অন্যান্য কাজের জন্য আলাদা আলাদা লোক খুঁজে থাকে। এবার যারা তাদের সেই কাজগুলো করে থাকে তাদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সার।

সুতরাং এভাবেই তুমিও যদি ভালো- ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং বা এই ধরনের কোনো কাজ জেনে থাকো তাহলে তুমিও খুব সহজেই বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো পরিমান রোজগার করতে পারবে। 


2. ফেসবুক পেজ থেকে অনলাইন আর্নিং


বর্তমানে ৮ থেকে ৮০ আমরা সকলেই ফেসবুক কমবেশি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু ফেসবুক কি শুধুমাত্র ফটো বা ভিডিও শেয়ার করা আর রিলস দেখার জন্যই? একদমই না। যদি আমরা ফেসবুকটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে সেখান থেকেও অনলাইন আর্নিং সম্ভব। এবার ফেসবুক পেজ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন Meme Page, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং পেজ, ব্লগ পেজ, প্রোডাক্ট রিভিউ পেজ ইত্যাদি। তুমি এর মধ্যে যেকোনো একটি শিখে সেটাকে কাজে লাগাতে পারো। 


উদাহরণস্বরূপ : তোমরা ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের Meme Page দেখে থাকবে যেখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ফানি মিম পাবলিশ করা হয়। এবার এই যে মীম পেজ গুলো রয়েছে,এরা মূলত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে মিলে, মীমের মধ্যেই ব্র্যান্ডের প্রোমোশন করে থাকে এবং এইভাবে তারা সেই ব্রান্ড বা কোম্পানির কাছ থেকে একটা মোটা টাকা নিয়ে থাকে। বর্তমানে এমন বহু মিম পেজ রয়েছে যারা ঠিক এই ভাবেই নাম কমানোর সঙ্গে সঙ্গে মোটা অর্থ উপার্জন করছে।


3. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে উপার্জনঃ


একটি ভালো সুন্দর ফেসবুক পেজ বা একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে, সেখানে অ্যামাজন বা ফ্লিপকার্টের, আলিবাবা বা এই ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইটের বিভিন্ন প্রোডাক্ট লিস্ট করে, সেই প্রোডাক্ট গুলো সেল করে সেখান থেকে প্রতিটা প্রোডাক্টের উপর নির্দিষ্ট কমিশন লাভ করা- সহজ ভাষায় এটাই হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।


উদাহরণস্বরূপ ; ধরো তোমার একটি অ্যাফিলিয়েট ফেসবুক পেজ বা ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে, তাহলে তুমি অ্যামাজন বা ফ্লিপকার্টের বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিজের ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইটের লিস্ট করে, যদি সেগুলো খুব ভালোভাবে সেল করতে পারো, তাহলে তুুমি প্রতিটা সেলেই কিছু কমিশন পাবে। তোমার পেজ থেকে যদি একটি ৫০ ডলারের প্রোডাক্ট সেল হল,তাহলে তুমি সেখান থেকে আনুমানিক ৫  ডলার কমিশন পাবে। এইভাবে তুমি যত বেশি প্রোডাক্ট সেল করতে পারবে তোমার উপার্জন ততো বেশি হবে। তাই

তোমাদের হাতে যদি বর্তমানে সময় থেকে থাকে তাহলে তোমরা মার্কেটিং শিখে রাখতে পারো। নিজের সঠিক পরিশ্রম এবং মেধা ব্যবহার করে বর্তমানে অনেকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছে। 


4. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসাবেঃ


যদি তোমার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থেকে থাকে বা এই ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ম্যানেজ করার দক্ষতা / অভিজ্ঞতা বা কাজ তোমার জানা থাকে, তাহলে তুমি খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে কোনো কোম্পানি, ইনস্টিটিউট, বা ইনফ্লুয়েন্সারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের কাজ করতে পারো। 


সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজ কী??

এবার বুঝে নাও সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার কারা বা তাদের কাজ কী থাকে। দেখো অনেক ছোটখাটো ইনস্টিটিউট, কোচিং সেন্টার রয়েছে যাদের হাতে সময় থাকে না তাদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টগুলো ঠিকভাবে ম্যানেজ করার। তো তাদের প্রয়োজন এমন একজনের যে তাদের ফেসবুক পেজ, ইনস্টাগ্রাম পেজ বা অ্যাকাউন্টের জন্য সঠিক পোস্ট তৈরি করবে, সেগুলো পাবলিশ করবে এবং ক্লায়েন্টদের ম্যাসেজের রিপ্লাই করবে। তোমার হাতে যদি সেই সময় থেকে থাকে এবং এসব কাজের প্রতি আগ্রহ হয়ে থাকো, তাহলে তুমিও খুব সহজে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে অনলাইন অর্থ উপার্জন করতে পারবে।


5. নোটস / পিডিএফ বিক্রি করে উপার্জন


বর্তমানে অনলাইনে এমন অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর সুযোগ রয়েছে, সেখানে নিজের লেখা বা তৈরি করা পিডিএফ নোট সেল করে উপার্জন করার। 


উদাহরণস্বরূপঃ ধরে নিচ্ছি তুমি বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ো এবং তোমার কাছে একাদশ শ্রেণীর ফিজিক্সের সম্পূর্ণ সিলেবাসের হ্যান্ড রিটেন পিডিএফ নোট রয়েছে, যার ডিমান্ড মার্কেটে অত্যন্ত বেশি। তাহলে তুমি সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের তৈরি করা সম্পূর্ণ পিডিএফ নোটস অনলাইন ভালো দামে সেল করতে পারো। এছাড়াও তোমার যদি কোন চেনা পরিচিত টেলিগ্রাম / হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল থেকে থাকে তাহলে তুমি সেই চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই চ্যানেলেও নিজের নোটস প্রচার করে ভালো দামে সেটাকে বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবে।


6. ইউটিউব চ্যানেলের সাথে যুক্ত হয়ে অনলাইন আর্নিং.


ছাত্র জীবনে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল শুরু করে সেখান থেকে উপার্জন করা মারাত্মক কঠিন একটা ব্যাপার। কিন্তু সহজ ব্যাপার হলো ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত এবং সাকসেসফুল একটি চ্যানেলের টিম মেম্বার হয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করে সেখান থেকে আর্নিং করা। বর্তমানে ইউটিউবে এমন বহু চ্যানেল রয়েছে যাদের কনটেন্ট কোয়ালিটি খুবই সুন্দর। উদাহরণস্বরূপ ভয়েস অফ ঢাকা, রুহি চ্যানেট সহ বিভিন্ন অডিও স্টোরি চ্যানেল। এই সমস্ত চ্যানেলের কনটেন্টের যে কোয়ালিটি সেটা দেখলেই বোঝা যায় যে আলাদা আলাদা কাজের জন্য আলাদা আলাদা লোক থাকে। বলতে গেলে একটা টিম তৈরি করা হয়।

সুতরাং তোমার যদি Thumbnail ডিজাইনিং বা পোস্টার ডিজাইনিং, ভিডিও এডিটিং, অডিও মিক্সিং, ভয়েস ওভার বা S.E.O এর কাজ জানা থাকে, তাহলে তুমিও এই ধরনের কোনো একটি চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে,তাদের টিমের একজন হয়ে কাজ করে খুব সহজেই অনলাইন আর্নিং করতে পারবে।


7. অনলাইন কোর্স সেলিং এর মাধ্যমে অনলাইন আর্নিং


যদি তোমার বিশেষ কোনো স্কিলস থেকে থাকে, যেমন কোডিং, স্পোকেন ইংলিশ, ওয়েব ডিজাইনিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা এই ধরনের কিছু যেটা তোমার মনে হয় তুমি অন্যকে শেখাতে পারবে এবং সেটা তাদের কাজে লাগবে, তাহলে তুমি অনলাইন কোর্স সেলিং এর দিকে যেতে পারো। বর্তমানে তুমি Google Meet / Zoom App- এ নিজের পেইড কোর্স চালাতে পারো। বর্তমানে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কোর্স পাওয়া যায় এবং যারা এই ধরনের কোর্স সেল করে থাকেন,তাদের উপার্জন কল্পনার বাইরে। তুই যদি তোমার এরকম কিছু জানা থাকে তাহলে তুমি যেমন সেটাকে অন্যকে শিখিয়ে অপরের উপকার করতে পারো, ঠিক সেরকমই নিজের আর্থিক অবস্থাটাকে ঠিক করতে পারো অনলাইন কোর্স সেলিং এর মাধ্যমে।


8. অফলাইন / অনলাইন টিউশন পড়িয়েঃ


ছাত্র জীবনে অর্থ উপার্জন করার প্রাচীনতম পদ্ধতি হয়তো অফলাইনে টিউশন পড়ানো। যদিও অনেকেই এটাকে খারাপের চোখে দেখেন কিন্তু এর মধ্যে খারাপের কিছু নেই। বর্তমানে অনেকেই রয়েছেন যারা টিউশনি করেই চাকরিজীবীদের থেকে বেশি উপার্জন করেন। যদিও ছাত্র জীবনে সেই পরিমাণ অর্থ উপার্জনের কোনো প্রয়োজন নেই। স্কুল কলেজের ছাত্র/ছাত্রী হিসেবে তুমি নিজের হাত খরচ এবং পড়াশোনা খরচ চালানোর জন্য নিজের বাড়ির আশেপাশের বাচ্চাদের অফলাইন টিউশন করিয়ে সেখান থেকেও একটা ভালো পরিমাণ আর্নিং করতে পারো। যদি তোমার পড়ানোর দক্ষতা থাকে এবং পড়ানো খুব ভালো হয়, তাহলে তুমি কোনো অনলাইন কোচিং ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানে অনলাইন কোচিংও করাতে পারো। এতে তোমার উপার্জন এবং পরিচিতি দুটোই বাড়বে।


9. ছোটোখাটো পার্ট টাইম জবঃ


ছাত্র জীবনে তোমার টাকার প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি হলে তখন তুমি বাড়ির আশেপাশের কোনো বড়ো দোকান, কোচিং ইনস্টিটিউট বা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সঙ্গে পার্ট টাইম জব করতে পারো। যদিও এটা বলে রাখা ভালো যে এই ধরনের কাজে তোমার শারীরিক পরিশ্রম যথেষ্ট বেশি হবে। যদি তুমি শারীরিক পরিশ্রম করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকো তাহলে তুমি সহজেই এই ধরনের কাজেও যেতে পারো। এতে যে শুধুমাত্র তোমার পড়াশোনার খরচ উঠে আসবে তাই নয়, সেই সঙ্গে তুমি নিজের পরিবারকেও আর্থিক সাহায্য করতে পারবে।


এটা পড়ে দেখো : 10th Pass ছাত্রছাত্রীদের জন্য সেরা 5 অনলাইন কোর্স! শিখতে পারলেই লাইফ সেট


10. Content Writer হিসাবে Part Time job. 


যাদের লেখালেখি করতে ভালো লাগে বা কোন একটা বিষয়ে প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করতেও খারাপ লাগে না,তাদের জন্য কন্টেন্ট রাইটিং হলো অর্থ উপার্জনের জন্য সেরা উপায়। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলের হয়ে অনেকেই বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করে বেশ ভালো টাকা উপার্জন করে থাকে। যদি তোমার বাংলা বা ইংরেজি লেখালেখির দক্ষতা অত্যন্ত ভালো হয় তাহলে তুমি কনটেন্ট রাইটিং (Content Writing Jobs) এর কোন একটি কোর্স করে একদম প্রফেশনাল কন্টেন রাইডার হয়ে, পার্ট টাইম কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করতে পারো। এই কাজ করলে তোমার আর যাই হোক অন্ততপক্ষে হাত খরচ এবং পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য অন্য কারো কাছে হাত পাততে হবে না।


শেষ ক্থা : ছাত্র জীবনে অর্থ উপার্জন করার যে সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে আমি তোমাদের বললাম এর মধ্যে কোনটিই কিন্তু সহজ নয় বা রাতারাতি সাকসেস পাওয়ার মতো ব্যাপার নয়। তুমি এর মধ্যে যেকোন এক দিকে যাও না কেন প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই তোমাকে কিন্তু আগে ভালোভাবে কাজ শিখতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে এবং নিজের মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে,তারপরেই তুমি সেখান থেকে সাফল্য পাবে।


এটাও পড়ে দেখো : পশ্চিমবঙ্গের সেরা 5টি সরকারি স্কলারশিপ! তুমিও পেতে পারো 96,000


1 Comments

  1. Social media manager hisabe k aj debe r kothay contact korbo ??

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post